বানারহাটে মার্কেট কমপ্লেক্স এর দোকান বিতরণ নিয়ে দূর্নীতির আশঙ্কা – ভাইরাল ফোন রেকর্ডিং

বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই, বানারহাট, ২৫শে এপ্রিল, ২০২১: বানারহাটে নির্মিয়মান মার্কেট কমপ্লেক্স এর দোকান বিতরণে আর্থিক দূর্নীতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কিছুদিন আগে একটি বিতর্কিত একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এলাকার অনেকেই মনে করেছেন এই ফোনালাপ হল বানারহাট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক এবং স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর দোকানের মালিকানা পাওয়ার বিষয়েই। যদিও টিএনআই এর সত্যতা যাচাই করেনি। এর পরই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল রাজনৈতিক রঙ না দেখে স্বচ্ছ ভাবে দোকান বিতরণ প্রক্রিয়া চালুর দাবী করেছে। অপরদিকে ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পরিকাঠামোগত অভাবে প্রতিবছরই বর্ষায় বানারহাটের সাপ্তাহিক হাটে কেনাবেচা দুষ্কর হয়ে দাঁড়াত। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের উদ্যোগে প্রায় ছয় কোটি চুরাশি লক্ষ টাকা ব্যায়ে ১লা মার্চ ২০১৯ দ্বিতল এই মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মানের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে মার্কেট কমপ্লেক্স এর দোকান নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। এখানে নির্মিত প্রায় ১৬০ টি দোকান হাটের ব্যবসায়ীদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু না হলেও – দোকানের মালিকানা পাওয়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা দূর্ণীতির আশঙ্কা করছেন। সেখানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি এক ব্যবসায়ীকে ৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে দোকানঘর পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। শেষে দোকান প্রতি সাড়ে চার লক্ষ টাকায় তিনি রাজি হন। এর সাথেই তাকে বলতে শোনা যায় দোকানের সংখ্যা কম হওয়ায় হাটের সমস্ত ব্যবসায়ীদের দোকান দেওয়া সম্ভব নয়, তাদের কাছের লোকদেরই দোকান দেওয়া হবে। এর পরই দোকানের মালিকানা পাওয়ার বিষয়ে বড় দূর্নীতির আশঙ্কা করে স্বচ্ছ ভাবে এই প্রক্রিয়া করার দাবী তুলেছেন ব্যবসায়ীরা।

এই অডিওর সত্যতা টি.এন.আই যাচাই করে নি

বানারহাট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তাপস পাল তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন – যে অডিওটি ছড়িয়েছে সেটি তৈরি করা। যিনি সেটি ছড়িয়েছিলেন সে সমিতির কাছে লিখিত ভাবে ক্ষমা ছেয়েছেন। তাপস বাবু বলেন কোনও রকম আর্থিক লেনদেনের সাথে তিনি যুক্ত নন। মার্কেট কমপ্লেক্স এর নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর দোকান বিতরণ প্রক্রিয়া প্রশাসন করবে। এই বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই বলে তিনি জানান।

তৃণমূলের বানারহাট ব্লক সভাপতি নয়ন দত্ত বলেন মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মানের কাজ এখনো শেষ হয় নাই, তার আগেই দোকানের মালিকানা প্রদান নিয়ে কিছু অভিযোগ সামনে আসছে। যাদের দোকান প্রাপ্য তাদের স্বচ্ছ ভাবে এর মালিকানা হস্তান্তর করা প্রয়োজন। যদি এই বিষয়ে কোনও দূর্ণীতি হয়ে থাকে তবে তা রুখতে প্রশাসনের কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।

সিপিআইএম এর বানারহাট আঞ্চলিক কমিটির সম্পাদক দীপক কুন্ডু বলেন হাটে যে সমস্ত ব্যবসায়ী রয়েছেন এবং যাদের জমি নেওয়া হয়েছে তাদের তালিকা তৈরি হওয়া দরকার। সেই অনুযায়ী স্বচ্ছ ভাবে আগে তাদের দোকানের মালিকানা প্রদান প্রয়োজন। তিনি বলেন মার্কেট কমপ্লেক্স পরিকাঠামো নির্মাণ পরিকল্পনা সঠিক হয় নাই। হাটের চরিত্র বদল করে শাটার লাগানো দোকান তৈরি করা হয়েছে। ফলে প্রান্তিক এলাকার যে সমস্ত ব্যবসায়ী সপ্তাহে ১ দিন হাটে সামান্য কিছু জিনিস বিক্রি করতে আসত, তারা সমস্যায় পড়বেন। দোকান পেলেও তাদের পক্ষে তার রক্ষণাবেক্ষণের খরচ দেওয়া সম্ভবপর হবে না। কমপ্লেক্স এর নিচ তলা খোলা রেখে উপরে দোকান নির্মান করলে সকল ব্যবসায়ী উপকৃত হত। তিনি বলেন দোকানের মালিকানা প্রদানের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ভাবে না হলে তারা ব্যবসায়ীদের স্বার্থে রাজনৈতিক ভাবে লড়াইয়ে নামবেন।

ছবি: সংবাদচিত্র

Facebook Comments
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!