শারদ উৎসবের আড়ম্বর থেকে শতযোজন দূরে বাংলার ইসলামপুরের দারিভিট
দীপঙ্কর দে (টি.এন.আই ইসলামপুর) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই, ইসলামপুর, ১০ই অক্টোবর, ২০১৮: শিক্ষকের দাবীতে ছাত্র আন্দোলনের জেরে পুলিশের গুলিতে দুই ছাত্র মৃত্যুতে তীব্র শোকাগ্রস্ত দারিভিটবাসীর দুর্গাপূজা বন্ধের সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি এবছর দারিভিটকাণ্ডে নিহত ছাত্র রাজেশ সরকারের বাড়িতে পিতৃক দুর্গাপূজা হচ্ছে না। জানা গিয়েছে, গত প্রায় ৫০ বছর ধরে চলে আসা দারিভিট বাজার দুর্গাপূজা কমিটির পুজো এবছর বন্ধ রাখলো কমিটি। বিজবাড়ি, মাঠপাড়া, কালীবাড়ি, কুন্দরগাঁও, হঠাৎ কলোনী, কালানাগিন, সোনামতি সহ বিভিন্ন গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ দারিভিট এলাকার তিনটি দুর্গাপুজো সাড়ম্বরে পালিত হয়ে থাকে। দারিভিট বাজার দুর্গাপূজা ছাড়াও মজুমদার পাড়া সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি ও নিহত রাজেশের পিতৃক দুর্গাপূজা। মজুমদার পাড়া সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি এবছর কোনও আড়ম্বর ছাড়াই শুধুমাত্র প্রতিমা দিয়েই পুজো সারার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে নিহত রাজেশ সরকারের বাবা নীলকমল সরকার ও জেঠু সুভাষ সরকার বলেন, গত ৯ বছর থেকে আমাদের বাড়ির পুজো আমাদের পরিবার ও সুখানিভিটা গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় হয়ে আসছে। কিন্তু গ্রামের মানুষরাই এবছর পুজো করতে আগ্রহী নয়। আমাদের মা সাবিত্রী সরকার সুগারের রোগী ছিলেন। সেসময় মায়ের পেটের ব্যাথা কমাতে আমরা মানস করলে সেই ব্যাথা সেরে যায়। সেই থেকেই আমাদের বাড়িতে দুর্গাপূজা শুরু হয়। সুখানিভিটা গ্রামের ২২টা বাঙালি পরিবার ও কিছু বিহারী পরিবার প্রতিবছর এই পুজোয় অংশ নেয়। এছাড়াও আমাদের পরিবার মামা অনাদি সরকারদের পরিবারমিলে আনন্দেই কাটে পুজোর কটা দিন। কিন্তু বাড়ির ছেলে না থাকাতে কেউই পুজো করতে রাজী নয়। দারিভিট বাজার দুর্গাপূজা কমিটির সম্পাদক সুবোধ মজুমদার বলেন, স্থানীয় দুইটি তরতাজা ছেলে রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মনের নৃশংসভাবে খুনে আমরা খুবই মর্মাহত। কমিটির সভা ডাকা হয়েছিল কিন্তু পুজোতে কারো সহমত নেই। তাই এবছর পুজো বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আশ্বিনের কাশফুল ফুটলেও শারদ উৎসবের আড়ম্বর থেকে শতযোজন দূরে বাংলার প্রথম ভাষা শহীদের দারিভিট গ্রাম।
ছবি: দীপঙ্কর দে (টি.এন.আই)