টাকা প্রতারনার অভিযোগে দায়ের, ঘটনার যোগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লার নাম
বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই, বানারহাট, ৩০শে জুলাই, ২০২১: ডুয়ার্সের এক আদিবাসী যুবতীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগে বানারহাটের এক ব্যবসায়ীর গ্রেফতারের পর সেই ঘটনায় জন বার্লা ঘনিষ্ঠ একাধিক বিজেপি নেতা ও সাংসদের তৎকালীন আপ্তসহায়কের যোগসাজশের ঘটনা প্রকাশ্যে এলো। অভিযোগ কারিনীর সাথে বার্লা ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতার কথপোকথনের একটি কল রেকর্ডিং রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায়। বুধবার জেলার পুলিশ সুপারের কাছে আদিবাসী যুবতীর দায়ের করা লিখিত অভিযোগে এই তিন জনেরও নাম রয়েছে।
জানা গিয়েছে বানারহাটের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর সাথে সম্পর্ক থাকা ওই আদিবাসী যুবতীকে ব্যবসায়ী একটি ১০ লক্ষ টাকার চেক দিয়েছিলেন, যেটি বাউন্স করে। এই টাকা উদ্ধারের জন্যই তিনি সাংসদের কাছে গিয়েছিলেন। বার্লা ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা ও অভিযোগকারিনীর কথপোকথনের ভাইরাল হওয়া ফোন রেকর্ডিংএ চাঞ্চল্যকর কিছু কথা উঠে আসে। যদিও এই রেকর্ডিং এর সত্যতা টিএনআই যাচাই করে নাই। এই রেকর্ডিংএ বিজেপি নেতাকে অভিযোগকারিনীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা চাইতে শোনা যায়, পাশাপাশি তাকে দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ী যে টাকা দিয়েছিল, তার একটা বড় অংশ সাংসদ বার্লা আত্মসাৎ করেছে বলেও এই বিজেপি নেতা জানান। বানারহাটে উত্তর পশ্চিম মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ প্রসাদ এবং সাংসদের তৎকালীন আপ্তসহায়ক অদীপ ভুজেল’কেও টাকার বখরা দিতে হবে বলে এই রেকর্ডিংএ শোনা যায়। পাশাপাশি আদিবাসী যুবতীকে কুপ্রস্তাব দিতেও ওই নেতাকে শোনা যায়।
আদিবাসী যুবতী লিখিত অভিযোগ করে জানান তার উপর চলা নিপীড়নের প্রতিকার চেয়ে তিনি বিগত বছর সাংসদ জন বার্লার লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানের বাসভবনে গিয়েছিলেন। সাংসদ তার কথা শুনে ৩০ তারিখ আবার তার বাড়ি যেতে বলেন। তিনি সে দিন সেখানে গেলে জন বার্লা ফোন করে বানারহাটের প্রতিষ্ঠিত সেই ব্যবসায়ীকে তার বাড়িতে ডেকে আনেন। ব্যবসায়ী সেখানে আসার পর বার্লা তার সহযোগী বিজেপি নেতা সঞ্জয় চৌধুরী এবং বানারহাট উত্তর পশ্চিম মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ প্রসাদকে ডেকে তাকে একটি আলাদা ঘরে বন্দী করে রাখেন। পরবর্তীতে তাকে হুমকি দিয়ে ভয় দেখিয়ে বেশ কিছু কাগজে সই করতে বাধ্য করেন। আদিবাসী যুবতী অভিযোগ করে বলেন সেই ব্যবসায়ী তাকে দেওয়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকা সাংসদকে দিলেও সেই দিন রাতে তিনি একা ফিরবেন এই অজুহাতে তাকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়, বাকি টাকা দিনের বেলা তার বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সঞ্জয় চৌধুরী তাকে আরোও ১ লক্ষ টাকা পৌঁছে দেন। বাকি টাকা তিনি পাননি বলে জানানোর পাশাপাশি তিনি বলেন ওই ব্যবসায়ী তাকে ফোনে জানিয়েছিল সমঝোতা করার জন্য সাংসদ জন বার্লা ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোট ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। সাংসদের তৎকালীন আপ্তসহায়ক অদীপ ভুজেল তাকে হুমকি দিয়েছিলেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। প্রতারিত হয়ে বিচার চেয়ে তিনি প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত সঞ্জয় চৌধুরী কোনও মন্তব্য করতে চান নি। অদীপ ভুজেল বলেন সাংসদের সহায়ক হিসেবে ওই যুবতিকে যতটুকু সাহায্য করা সম্ভব তা তিনি করেছিলেন, কোনও আর্থিক লেনদেনের সাথে তিনি যুক্ত নন বলেই অদীপ জানান। সাংসদ জন বার্লা বলেন মহিলাটা সাহায্য চাইতে তার কাছে এসেছিল, তিনি সাধ্যমতো সাহায্য করেছেন। তার আশেপাশে থাকা কেউ মহিলাটিকে কি বলেছে এবং তাদের সাথে মহিলাটির কি কথাবার্তা হয়েছে তা তার জানা নেই।
ছবি: ফাইলচিত্র