ম্যাকাউটের গবেষণায় সাফল্যের পালক গুঁজে দিল বারাসাতের তরুণ গবেষক দীপশুভ্র

সওদাগরের নৌকা যত চলে নদীর পরে, হেথায় ঘাটে বাঁধেনা কেউ কেনা-বেচার তরে।
সৈন্য দলে উড়িয়ে ধ্বজা কাঁপিয়ে চলে পথ, হেথায় কভু নাহি থামে মহারাজের রথ।

বর্তমানে মানুষের হাতে স্মার্টফোন আর নানা গ্যাজেটের পসরা নিঃসন্দেহে প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতিকে করছে দর্শিত৷ ধীরগতিতে সাধারণ মানুষ হয়ে উঠছে ডিজিটাল, যা প্রশংসনীয়। কিন্তু এসবের মধ্যে ভারতীয় সংস্থা কই? যখন চারিদিকে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ রব ধ্বনিত হচ্ছে ঠিক সেই সময় অন্ধকারে মেটো প্রদীপের দ্যুতির ন্যায় জ্বলজ্বল করে উঠলো মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও গবেষক তথা বারাসাতের ছেলে দীপশুভ্র গুহরায়৷

তরুণ গবেষক দীপ, অ্যাপ্লিকেশনটির নামকরণ করেছে “স্মার্ট গেটওয়ে সিলেকশন অ্যালগোরিদম অ্যান্ড ডিভাইস”। এই অ্যাপ্লিকেশনটি এবং সংশ্লিষ্ট সেন্সর ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বের অভাবনীয় নানান কাজ করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ কৃষিক্ষেত্রে জমিতে সময় সময় জল দেওয়া, বাড়িতে রোগী থাকলে তাকে অক্সিজেন দেওয়া, সাম্প্রতিক ব্রিজগুলি যে ভাবে ভেঙ্গে পড়ছে সেগুলির তদারকিও সম্ভব এই অ্যাপের মাধ্যমে।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসতের বাসিন্দা বছর সাতাশের দীপশুভ্র টি.এন.আই কে বলেন, ‘‘বিভিন্ন অ্যাপের ক্ষেত্রে ‘মেসেজ লস’, ‘এন্ড-টু-এন্ড ডিলে’ সমস্যা দুটিই গুরুত্বপূর্ণ৷ আমার তৈরি প্রোটোটাইপ ও অ্যালগোরিদম্ একসঙ্গে কাজ করলে অ্যাপের অনেক সমস্যা থেকেই মুক্তি পাওয়া যাবে৷ বিশ্বে এখনো পর্যন্ত কেউই এই গবেষণায় সফল হতে পারেননি৷”

দীপশুভ্রর তৈরি প্রোটোটাইপ এর ব্লু প্রিন্ট

তরুণ গবেষক টি.এন.আই কে আরো জানান যে, “আমরা নানান ভাবে এই অ্যাপ্লিকেশনটিকে ব্যবহার করতে পারি, কোথাও আগুন লেগেছে, এখন ডিজিটাল সিগন্যালটির মাধ্যমে স্প্রেয়িং ইউনিটকে সচেতন জানাতে হবে যে তাকে জল স্প্রে করতে হবে, এই মেসেজটি যদি সেন্সর সঠিক সময় স্প্রেয়িং ইউনিটের কাছে না পৌঁছতে পারে তবে আগুন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমার অ্যাপ্লিকেশনটি সেই মেসেজ সঠিক সময়ে পৌঁছে দিবে নির্দিষ্ট গ্যাজেটে, কোনো রকম দুর্ঘটনায় যাতে না ঘটতে পারে।”

ম্যাকাউটের তরুণ গবেষকের কাজ ইতিমধ্যে ‘এলসেভিয়ার এফজিসিএস’ জার্নালে স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে এবার বলা যেতেই পারে ম্যাকাউটের চূড়ায় এক অসাধারন পালক গুঁজে দিলেন বারাসাতের এই তরুণ গবেষক।

গবেষক দীপশুভ্র জানিয়েছেন, এই কাজে তাকে প্রবল উৎসাহ জুগিয়েছেন তাঁর গাইড প্রফেসর দেবাশীষ দে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সৈকত মৈত্র এবং তথ্য বিজ্ঞানী ডঃ মুহঃ আফতাবুদ্দিন। এই গবেষণায় জুনিয়র গবেষক শ্রীমতি বিপাশা মাহাতো ও মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির ডাইরেক্টর শ্রী রাজকুমার বুইয়া মহাশয়ের অবদান অনস্বীকার্য বলে জানিয়েছেন তরুণ গবেষক।

প্রতিবেদন: ভাস্কর চক্রবর্তী (টি.এন.আই)

 

Facebook Comments
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!