বিন্নাগুড়িতে সালিসি সভায় স্ত্রীকে তিন তালাক দেওয়ার অভিযোগ
অঙ্কিতা সেন (টি.এন.আই বানারহাট) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই,বিন্নাগুড়ি, ৪ঠা জুন, ২০২১: সালিসি সভায় তিন তালাক দেওয়ার ঘটনা ঘটল ডুয়ার্সের বিন্নাগুড়িতে। বিন্নাগুড়ি চা বাগানের বিচ লাইন শ্রমিক বস্তির বাসিন্দা জিন্নাত খাতুন এর দুই বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর পন এর জন্য নির্যাতনের শিকার হয়ে বাপের বাড়ি চলে আসে নির্যাতিতা। বিচার চেয়ে অঞ্জুমান কমিটির কাছে আবেদন করলে সালিসি সভা চলাকালী তার স্বামী তাকে তিন তালাক দিয়ে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তিন তালাক নিষিদ্ধ হওয়ায় জিন্নাত বিচার চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হল।
জিন্নাত এর বিয়ের পর এক সন্তানের জন্ম। বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় পন এর জন্য তার উপর নির্যাতন। অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সন্তান সহ বাপের বাড়িতে আশ্রয় নেয় বছর পচিশের গৃহবধূ জিন্নাত খাতুন। বাপের বাড়িতে থেকেই বিচার চেয়ে অঞ্জুমান কমিটির কাছে সে আবেদন করেন। লকডাউনের কারনে সমাজপতিরা ১০ মাস সালিসি সভায় বসতে পারেন নি। অবশেষে গত ১ জুন বিন্নাগুড়ির স্থানীয় জুমা মসজিদে সালিসি সভা বসে। সেই সভায় কোন মিমাংসা সুত্র বের হওয়ার আগে তার স্বামী প্রকাশ্য সভায় স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে বৈবাহিক জীবনে অবশান ঘটায়। অসহায় স্ত্রী এখন বানারহাট থানার দ্বারস্থ।
অসহায় জিন্নাত খাতুন শুক্রবার বানারহাট থানার সামনে দাঁড়িয়ে জানান, “আমরা নিজেরা পছন্দ করেই বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু, বিয়ের পর থেকে শশুড় শাশুড়ী আমাকে পছন্দ করত না। সন্তান হওয়ার পর স্বামীও শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচার শুরু করে। ওদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাপের বাড়িতে চলে আসি। বাপের বাড়িতে থেকে আমাদের সমাজের অঞ্জুমান কমিটির কাছে বিচার প্রার্থনা করি। লকডাউনের জন্য দীর্ঘদিন বিচার বসেনি। অবশেষে গত ১ জুন বিন্নাগুড়ির জুমা মসজিদে সালিসি সভা বসে। সেই সভায় আমাকে তিন তালাক দিয়ে সম্পর্ক ছেদ করেছে। এখন আমি কি করব? আমি পুলিশের কাছে বিচার চাইতে এসেছি। এখন আমাদের দেশে তিন তালাক নিষিদ্ধ হলেও বেআইনি ভাবে আমার সাথে সম্পর্ক ছেদ করেছে। আমি বিচার চাইছি।”
বানারহাট থানা সুত্রে জানা গেছে, ওই মহিলাকে তার সুবিধার্থে বানারহাট থানার বিন্নাগুড়ি পুলিশ আউটপোস্টে অভিযোগ দায়ার করতে বলা হয়েছে। অভিযোগ দাখিল হলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
ছবি: অঙ্কিতা সেন (টি.এন.আই)