১৯০৮ সাল থেকেই শিলিগুড়ির নাম বিশ্বের দরবারে জুড়ে আছে এক ধরনের শামুক আবিস্কারে
আর. সুব্রত (টি.এন.আই শিলিগুড়ি) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই, শিলিগুড়ি, ২৭শে মে, ২০২১: কয়েক দিন ধরে সোশাল মিডিয়ায় আলোচনা চলছে শিলিগুড়ির নাম এই প্রথমবার বিশ্বের দরবারে এসেছে এক নতুন উদ্ভিদ প্রজাতি আবিষ্কারের জন্যে। এর কারন হিসেবে দেখানো হচ্ছে এই উদ্ভিদের প্রজাতির নামকরণ করা হয়েছে শিলিগুড়ির নামে। এই উদ্ভিদ আবিস্কার যেহেতু শিলিগুড়ি অঞ্চলে হয়েছে বিজ্ঞানীরা এই উদ্ভিদের নাম ‘টোরেনিয়া সিলিগুড়িইয়েন্সিস’ কেই স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে বা হচ্ছে এই প্রথম শিলিগুড়ির নাম এই জাতীয় কোন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে এই তথ্যটি সঠিক নয়। শিলিগুড়ির নাম ১৯০৮ সালেই এই এলাকার থেকে আবিষ্কৃত এক বিশেষ শামুক প্রজাতির এক প্রভেদ আবিষ্কারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। এই শামুক প্রজাতির এই প্রভেদের নাম করা হয় ‘ইউনিও শিলিগুড়িয়েন্সিস’। এই শামুক প্রজাতির এই প্রভেদ আবিস্কার করেন সেই সময়ের ব্রিটিশ ম্যালাকোলজিস্ট (যারা শামুক নিয়ে গবেষণা করেন) হাগ বারথন প্রেস্টন। হাগ বারথন প্রেস্টন সেই সময়ে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় শামুক নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। ‘ইউনিও শিলিগুড়িয়েন্সিস’ এর উল্লেখ আছে এন.ভি সুব্বা রাও এর লেখা ‘ফ্রেস ওয়াটার মোলাসেস অফ ইন্ডিয়া, শীর্ষক একটি বইয়ে পাওয়া যায়। এই বইটি জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া, কলকাতা দ্বারা প্রকাশিত করা হয় ১৯৮৯ সালে।
এছারাও ২০১২ সালে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োজিস্ট দের দ্বারা শিলিগুড়ির মহানন্দার জল গবেষণা করে এক নতুন ব্যাক্টেরিয়া প্রজাতি আবিস্কার করা হয় যার নাম রাখা হয় ‘ব্রেভিব্যাক্টেরিয়াম শিলিগুড়িয়েনসে’। এই গবেষণা পরবর্তীতে ইন্টারন্যাশানাল জার্নাল অফ সিস্টেমেটিক অ্যান্ড ইভলিউশানারি মাইক্রোবায়োজি তেও প্রকাশিত হয়। এই গবেষণায় অংশ গ্রহণ করেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনলজি বিভাবের অধ্যাপক ডঃ রনধীর চক্রবর্তী এবং সেই সময়কার গবেষক অরভিন্দ কুমার। এছারাও এই গবেষণায় পরামর্শদাতা হিসেবে ছিলেন ইস্তাম্বুলের ইয়েদিতেপে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ইকবাল আঘা এবং ওয়াজানিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়, নেদারল্যান্ডের অ্যাহমেত কাতি।
সব মিলিয়ে বলা যেতেই পারে যে শিলিগুড়ির নাম অনেক আগেই বিশ্বের দরবারে প্রাণী জগতের প্রজাতি বা প্রভেদের এই এলাকায় আবিষ্কারের মাধ্যমে। যার জলজ্যান্ত উধাহরন হল ‘ইউনিও শিলিগুড়িয়েন্সিস’ (শিলিগুড়ি অঞ্চলে পাওয়া শামুক প্রভেদ) এবং ‘ব্রেভিব্যাক্টেরিয়াম শিলিগুড়িয়েনসে’ (শিলিগুরিতে বয়ে চলা মহানন্দা নদী থেকে আবিস্কার করা ব্যাক্টেরিয়া প্রজাতি)।
ছবি: ফাইলচিত্র