চোপড়ায় কংগ্রেস – তৃণমূল সংঘর্ষ, মৃত এক কংগ্রেস কর্মী, উত্তাল এলাকা
দীপঙ্কর দে (টি.এন.আই ইসলামপুর) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই, চোপড়া, ৪ঠা নভেম্বর, ২০১৮: চোপড়ার লক্ষ্মীপুরে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস তৃণমূলের সংঘর্ষ উত্তেজনা ছড়ালো। ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক গুলি ও বোমাবাজির খবর মিলেছে। গুলিবিদ্ধ এক কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যুতে এলাকায় অঘোষিত বনধের চেহারা নিয়েছে। জানা গিয়েছে, চোপড়া ব্লকের লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাকলাগছ মোড় এলাকায় এদিন এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস তৃণমূলের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি ও গুলি চালনার অভিযোগ উঠেছে। সংঘর্ষের জেরে তৃণমূলের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয় মোহাম্মদ সমিরুল নামে এক কংগ্রেস কর্মী বলে অভিযোগ। দলীয় কর্মীরা মোহাম্মদ সমিরুলকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। পাশাপাশি ঘটনায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হামলায় গুরুতর জখম আরেক কংগ্রেস কর্মী আবুল হোসেন বলে অভিযোগ। তাকে দোলুয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসকরা তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেছেন। কংগ্রেস কর্মী মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে দলীয় কর্মীরা। পাশাপাশি মালিনগাও এলাকাতেও রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ বিক্ষোভ করে দলীয় কর্মীরা। ঘটনার জেরে লক্ষ্মীপুর, আলমগছ, মালিনগাঁও সহ বেশকয়েকটি গ্রামে দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি এলাকা রাস্তাঘাট জনশুন্য হয়ে অঘোষিত বনধের চেহারা নেয়। যদিও নিজেদের দলীয় কোন্দলের ঘটনাকে চক্রান্ত করে তৃণমূলকে বদনাম করার ষড়যন্ত্র করছে কংগ্রেস বলে অভিযোগ তৃণমূলের। ঘটনার খবর পেয়ে চোপড়া থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিক চন্দ্র মন্ডল, ভারপ্রাপ্ত মহকুমা পুলিশ আধিকারিক ডিএসপি দেবরাজ ঘোষ ও ইসলামপুর থানার আইসি রাজেন ছেত্রীসহ বিশাল পুলিশবাহিনী লক্ষীপুরের বিভিন্ন এলাকায় দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে কংগ্রেস কর্মী খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশি টহলদারিও চলছে। লক্ষীপুরের কংগ্রেস নেতা মিরাজুল ইসলাম বলেন, লক্ষ্মীপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোট গণনার উপরে কোর্টে মামলা রয়েছে। আমরা প্রশাসনকে বলেছিলাম যতদিন মামলার নিষ্পত্তি না হচ্ছে ততদিন পঞ্চায়েতে প্রশাসক নিয়োগ করা হোক কিন্তু প্রশাসন তা না মেনে জোর করে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করে বেআইনিভাবে পঞ্চায়েত চালানোর চেষ্টা করছে। আমাদের কর্মীদের খুন করে শাসকদল তৃণমূল এলাকার দখল নিতে চাইছে। কিন্তু মানুষ আমাদের সাথে আছে, খুনিদের গ্রেপ্তার না হলে আমরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো। উত্তর দিনাজপুর জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক জিয়াউল হক বলেন, আজকের ঘটনা কংগ্রেসের নিজেদের দলীয় কোন্দলের কারণে ঘটেছে। বিরোধীরা এলাকার উন্নয়নকে স্তব্ধ করে দিতে চাইছে। আজকের ঘটনার সাথে তৃণমূলের কোন যোগাযোগ নেই। তৃণমূলকে বদনাম করতেই কংগ্রেসের এই ষড়যন্ত্র। মানুষ আমাদের সাথে আছে তাই সঠিক সময় মানুষ সঠিক জবাবটাই দেবে।
ভিডিও ও ছবি: দীপঙ্কর দে (টি.এন.আই)