ইসলামপুরে বনধ ব্যর্থ করতে দিনভর পুলিশি তান্ডব, তবু জ্বলল বাস, বন্ধ দোকান
দীপঙ্কর দে (টি.এন.আই ইসলামপুর) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই, ইসলামপুর, ২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮: বিজেপির ডাকা বাংলা বন্ধে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর। বনধ সমর্থকরা অবরোধ বিক্ষোভে সামিল হলে পুলিশের বিশাল বাহিনী এসে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। ক্ষুব্ধ বনধ সমর্থকরা চারটি সরকারি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি চারটি বাসে ভাঙচুর চালায়। বনধ সমর্থকদের সাথে দফায় দফায় পুলিশের সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে বনধ সমর্থকদের ইট পাথর ছোঁড়া, রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ বনধ সমর্থকদের। ইসলামপুর শহরের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে দফায় দফায় বিক্ষিপ্তভাবে বনধ সমর্থকরা সরকারী ও বেসরকারী বাস ভাঙচুর করায় রাস্তায় নামে উত্তরবঙ্গ পুলিশের আইজি আনন্দ কুমার সহ বিশাল পুলিশবাহিনী। উত্তরবঙ্গ পুলিশের আইজি আনন্দ কুমারের নেতৃত্বে উত্তর দিনাজপুরের জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার সহ রাফ কমব্যাট ফোর্স বনধ সমর্থকদের উপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে, বনধ সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। চরম উত্তেজনা ইসলামপুর শহরজুড়ে। দীর্ঘ তিনঘন্টা ধরে শহরজুড়ে চলে র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্সের দাদাগিরি, ধরপাকড়।ইসলামপুরের মিলনপল্লী থেকে শুরু করে কলেজ মোড়, বিহার মোড়, শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া বাড়িতে ঢুকে রীতিমতো তান্ডব চালায় পুলিশ। সড়কের ধারে থাকা বন্ধ দোকান থেকে দরজা ভেঙে বাসিন্দাদের বের করে মারধর করে গাড়িতে তুলে পুলিশ। এছাড়াও সড়ক দিয়ে যাওয়া মোটর বাইক আরোহীদের ধরে মারধর করে আটক করে পুলিশ। তিন ঘন্টা ধরে এহেন পুলিশি তান্ডবের জেরে বাকি বিক্ষোভকারীরা অন্যত্র চলে যায়। তবে এদিন বিজেপির ডাকা ১২ ঘন্টার বাংলা বনধে ইসলামপুর মহকুমা জুড়ে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। রাস্তায় কিছু গাড়ি চললেও দোকানপাট, বাজার একদম বন্ধ ছিল। এদিনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ইসলামপুরে ২৬ জন বনধ সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ইসলামপুরের দাঁড়িভিট গ্রামে পুলিশ ছাত্র সংঘর্ষে দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে আজ ১২ ঘন্টার বাংলা বনধে সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠে ইসলামপুর শহর। এছাড়াও এদিন সকাল থেকেই পুলিশ মারমূখী হয়ে ওঠে। রাজ্য সড়ক ও ৩১ নং জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করার পাশাপাশি ইসলামপুরের শ্রীকৃষ্ণপুরে ৩১ নং জাতীয় সড়কে দুটি সরকারি বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয় বনধ সমর্থকেরা। দমকল বাহিনী এসে আগুন নেভানোর কিছু পরেই ইসলামপুরের কলেজ মোড়ে আরও একটি সরকারি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় বনধ সমর্থকেরা। পুলিশ কলেজ মোড়ে পৌঁছালে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাথর ছুঁড়তে থাকে বন্ধ সমর্থকেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ সেখানে টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটানোর পাশাপাশি রাবার বুলেট চালায়। এরই মাঝে ইসলামপুরের ফার্ম কলোনি এলাকায় বন্ধ সমর্থকেরা অপর একটি সরকারি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয়। চারটি বাসে বাপক ভাঙচুর চালায় বন্ধ সমর্থকেরা। এরপর পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে, শুরু হয় ধরপাকড়। মোট ২৬ জন বন্ধ সমর্থককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অন্যদিকে ইসলামপুরে দারিভিট এলাকা এদিন একটিও দোকানপাট খোলেনি। মানুষ স্বেচ্ছায় এদিনের বনধকে সমর্থন করে। সূত্রের খবর, ইসলামপুরের এই পরিস্থিতি তৈরিতে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ ঘোষকে আটক করেছে পুলিশ।
ছবি: দীপঙ্কর দে (টি.এন.আই)