ভস্মীভূত দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের মন্দির পরিদর্শনে মন্ত্রী ও এস.জে.ডি.এ চেয়ারম্যান
সুপ্রিয় বসাক (টী.এন.আই ধুপগুড়ি) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টী.এন.আই রাজগঞ্জ ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮: গত রাতে আগুনে ছাই হয়েছে শিকারপুর এলাকায় অবস্থিত এই প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মন্দির দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের মন্দির। আজ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন রাজ্যের পর্যটন দফতরের মন্ত্রী শ্রী গৌতম দেব এবং এস.জে.ডি.এ র চেয়ারম্যান ড: সৌরভ চক্রবর্তী। ড: সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে এবং আজ থেকে এই হেরিটেজ মন্দিরকে ফের তৈরি থেকে শুরু করে রক্ষনাবেক্ষন ও এলাকার উন্নয়ন ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন। যেহেতু এই এলাকা চা বাগান কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে, তাই বাগান মালিককে অনুরোধ অবিলম্বে এই মন্দিরটি জেলা পরিষদ বা এস.জে.ডি.এ র হাতে তুলে দেওয়ার। এতে আগামী দিনে পর্যটন দফতরের মাধ্যমে এই হেরিটেজ মন্দিরটিকে রক্ষনা বেক্ষন এবং উন্নয়ন সম্ভব। এছাড়াও জলপাইগুড়ি শহরের সঙ্গে তুলনা করে তিনি এদিন বলেন, এই মন্দিরের অগ্নিকান্ড চিন্তার বিষয় রয়েছে। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌছান জেলাশাসক রচনা ভগত, জলপাইগুড়ি রেঞ্জের ডি.আই.জি শ্রী রাজেশ যাদব, যুব তৃনমূল সভাপতি শ্রী সৈকত চ্যাটার্জি। যুব সভাপতি সৈকত আগুন লাগার ঘটনাকে অন্ত্রর্ঘাত বলে মনে করছেন। তিনি বলেন এই কাজটা যারা করল তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
পর্যটন মন্ত্রী শ্রী গৌতম দেব বলেন আমরা ধর্মীয় স্থান গুলিকে নিয়ে ট্যুরিজম গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। এই ভবানী পাঠকের মন্দিরটিকেও আমরা বানাতাম। ফরেনসিক দল আসবে। এখানে আগুন কিভাবে লাগল তারর তদন্ত করবে। আমরা আগের অবস্থায় কিভাবে মন্দিরটি ফিরিয়ে আনতে পারি সেই কাজ করব। উল্লেখ্য, এই মন্দিরে মা কালীর মূর্তি ছাড়াও তিস্তাবুড়ি, ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরানী, গঙ্গাদেবী, সিদ্ধপুরুষ মোহনলালের মূর্তি ছিল। বৈকুন্ঠপুর রাজবংশের বংশধর দর্পদেব রায়কতের উদ্যোগেই এই মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। মিঃ রেমন্ড হেলাইচ পাইন নামে এক ইংরেজ স্থপতি মন্দিরটি নির্মাণ করেন। ১৮৭১ সালে রাজা যোগেন্দ্রদেব রায়কতের আমলে মন্দিরটি সংস্কার করা হয়। ব্রিটিশদের পাশাপাশি ধনী, জমিদারদের উপর লুঠ চালিয়ে ধনসম্পত্তি গরীবদের মধ্যে বিলীয়ে দিতেন তারা। ব্রিটিশদের সঙ্গে লড়াই করতে ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানী বৈকুণ্ঠপুরের শিকারপুর চা বাগানের জঙ্গলের মধ্যে ঘাঁটি তৈরি করেন। সেই ঘাটি মন্দির রুপে পরিচিত। আগেও একবার আগুন লেগে এই মন্দিরে ভবানী পাঠক এবং দেবী চৌধুরানীর কাঠের তৈরি বিগ্রহ নষ্ট হয়ে যায়। পরে তা মাটির তৈরি করা হয়।এলাকাবাসী শুধু নন বছরের আষাঢ় এভং কার্তিক মাসে এই মন্দিরে অনুষ্ঠিত হওয়া কালীপুজোকে কেন্দ্র করে ভীড় জমান দূর দূরান্তের মানুষও। শুক্রবার রাতের এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ছাই হয়ে গেল শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাস। নষ্ট হয়ে গেল উত্তরবঙ্গের একটি গর্বের স্মৃতি। তবে আগুনের কারন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারন এখনো জানা যায়নি। এবিষয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন এলাকাবাসীরা।
ছবিঃ সুপ্রিয় বসাক (টী.এন.আই)