লাগাতার বৃষ্টিতে বানারহাট – বিন্নাগুড়িতে বন্যার আশঙ্কায় দেখা দিয়েছে
অঙ্কিতা সেন (টি.এন.আই বানারহাট) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই, শিলিগুড়ি, ২৯শে জুন, ২০২১: লাগাতার ভারী বৃষ্টি এবং ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা জলে প্লাবিত হল ডুয়ার্সের বানারহাট ও বিন্নাগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বর্ষণের ফলে ভুটান পাহাড় থেকে বয়ে আসা জলে হাতিনালার দু’কূল ছাপিয়ে বানারহাট ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেললাইন ও রাজ্যসড়ক, জলমগ্ন চারটি চা বাগান। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাপরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বানারহাট ও বিন্নাগুড়ি স্টেশানের মাঝে হাতিনালার জল রেললাইন পার হয়ে বানারহাট এর ক্ষুদিরামপল্লী ও সুকান্তপল্লী এলাকায় ঢুকে পড়তে থাকে। রেললাইনের নীচের পাথর জলের তোড়ে সরে গিয়ে একাধিক জায়গায় রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রেললাইন মেরামতের জন্য তড়িঘড়ি উদ্যোগ নেওয়া হয়। বন্যায় বিন্নাগুড়ির নেতাজি পাড়া, এস.এম কলনী, বিন্নাগুড়ি স্টেশান বাজার সংলগ্ন এলাকাও প্লাবিত হয়। জলবন্দী হয়ে পড়ে প্রায় দেড়শো পরিবার। হলদিবাড়ি থেকে বিন্নাগুড়ি যাওয়ার রাজ্য সড়ক জলমগ্ন হয়ে পড়ায় গাড়িচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বানারহাট চা বাগান, মোরাঘাট চা বাগান, হলদিবাড়ি চা বাগান ও তেলিপাড়া চা বাগানের বিস্তীর্ণ এলাকার চা গাছ বন্যার জলে ডুবে রয়েছে। ডুয়ার্স এলাকার মাটির মৃদু আম্লিকতার কারণেই এখানে চা চাষের আদর্শ পরিবেশ গড়ে উঠেছে। কিন্তু ডলোমাইট মেশা বন্যার জলের কারণে মাটির পি.এইচ মান (অম্ল-ক্ষারকত্ব পরিমাপের একক) অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। চা চাষের জন্য মাটির পি.এইচ ৫.৫ হওয়াটা কাম্য কিন্তু ডলোমাইটের কারণে তা অনেকক্ষেত্রে ৭ বা তার চেয়ে বেশিতেও পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে দীর্ঘমেয়াদী ভাবে চা গাছের উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বানারহাটের বাসিন্দারা জানান, হাতিনালার বাঁধ সংস্কার কাজ হওয়া সত্বেও বানারহাটের বিভিন্ন এলাকায় জল ঢুকে পড়ছে। কলনীর যে সমস্ত এলাকা অতীতে কোনওদিন প্লাবিত হত না, বাঁধ মেরামতের পর সেই সমস্ত এলাকাতেও জল ঢুকছে। তবে এবার শান্তিপাড়া ও সুভাসনগর এলাকায় জল না ঢোকায় সেখানকার বাসিন্দারা খুশি।
এদিন বন্যা দুর্গত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন বানারহাটের ভিডিও প্রহ্লাদ বিশ্বাস। তিনি জানান বাসিন্দাদের প্রয়োজন হলে যাতে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা যায় সেই চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি যাদের ঘরে জল ঢুকে পড়েছে, তাদের কিভাবে সহায়তা করা যায় সে বিষয়টিও তিনি ভেবে দেখছেন বলে জানান।
ছবি: অঙ্কিতা সেন (টি.এন.আই)