করোনাকালে স্কুলে অভিভাবকদের বদলে ছাত্রীদের হাতে মিড-ডে-মিল
বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই, বানারহাট, ১২ই জুন, ২০২১: করোনার জেরা চলা কড়া বিধিনিষেধের মাঝে সরকারি নির্দেশিকা উপেক্ষা করে পড়ুয়াদের হাতে মিড ডে মিলের সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সরকারি নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, করোনা পরিস্থিতিতে ছাত্র-ছাত্রীরা কোনমতেই বিদ্যালয়ে আসবে না। মিড-ডে-মিলের সামগ্রী এবং ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ অভিভাবক দের হাতে তুলে দেবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শুক্রবার বানারহাট বালিকা বিদ্যালয় দেখা গেল প্রচুর ছাত্রী স্কুলে এসে মিড ডে মিলের সামগ্রী, ব্যাগ, পোশাক অবাধে নিয়ে যাচ্ছেন। কিছু ছাত্রী অভিভাবকদের সাথে নিয়ে স্কুলে এসেছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদেরও এই সামগ্রী বিতরণের কাজে ডাকা হয় না বলেই অভিযোগ। সংবাদমাধ্যমের সামনে বিদ্যালয়ে উপস্থিত শিক্ষিকা ও কর্মীরা বিষয়টি মেনে না নিলেও, বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষিকা পরবর্তীতে জানান মানবিকতার খাতিরে তারা বিদ্যালয়ে আসা ছাত্রীদের হাতেই মিড-ডে-মিল এর সামগ্রী সহ অন্যান্য জিনিস তুলে দেন।
ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে এসে মিড-ডে-মিল সহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি এই সমস্ত সামগ্রী বিতরণের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের যুক্ত না করারও অভিযোগ উঠল বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা জানান বিগত দেড় বছরে মাত্র ১ বার তাদের ডাকা হয়েছিল। তারা বেতন পেলেও – করোনা ছড়ানোর আশঙ্কার কথা বলে তাদের বিদ্যালয়ে যেতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা চান তাদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া কাজ করার সুযোগ যেন তাদের দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের কাজে যুক্ত হতে না দেওয়ায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা কর্মক্ষেত্রে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন বলে তারা জানান।
বানারহাট উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি পায়েল মল্লিক বলেন, “এটা ঠিকই যে সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করা হচ্ছে তবে তা মানবিকতার খাতিরে। বিদ্যালয়ের কাছাকাছি যেসব ছাত্রী থাকে, তাদের অভিভাবকরা এসে মিড ডে মিল এর সামগ্রী নিয়ে যান। কিন্তু আশেপাশের বিভিন্ন চা বাগান থেকে যে সব ছাত্রীরা স্কুলে আসেন তাদের বেশির ভাগের মা বাবা চা বাগানে কাজ করেন। ফলে তাদের পক্ষে স্কুলে আসা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এমতাবস্থায় মানবিকতার খাতিরে বিদ্যালয়ে আসা ছাত্রীদের ফিরিয়ে না দিয়ে তাদের হাতে মাঝেমাঝে মিড ডে মিলের সামগ্রী দেওয়া হয়ে থাকে।” স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের বিদ্যালয়ে না আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন যেহেতু বাচ্চারা এসে সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে তাই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের এই বন্টনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভালোভাবে কাজ করার জন্যই নিয়মের বাইরে গিয়ে এমন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কাজরি ঘোষ বলেন যে সমস্ত বাচ্চাদের বাবা-মা কাজ করার জন্য স্কুলে আসতে পারে না, তারা স্কুলে এসে সেটি জানালে তাদের হাতে মিড-ডে-মিল সহ অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে দেওয়া হয়। এটা তারা মানবিকতার খাতিরে করে থাকেন বলে জানান।
ছবি: সংবাদচিত্র