বন্ধ হয়ে গেল ডুয়ার্সের দেবপাড়া চা বাগান
অঙ্কিতা সেন (টি.এন.আই বানারহাট) । টি.এন.আই সম্পাদনা জলপাইগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই, বানারহাট, ৪ঠা মার্চ ২০১৯: লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এবার বন্ধ হয়ে গেল ডুয়ার্সের দেবপাড়া চা বাগান। প্রথা অনুযায়ী শীতের মরসুমের পর বাগানে পুনরায় কাজ শুরু হলে শ্রমিকেরা অর্ধদিবস কাজ করছিলেন, কিন্তু বাগান কর্তৃপক্ষ মার্চের ১ তারিখ থেকে তাদের দু’বেলা কাজ করার কথা বললেও শ্রমিকেরা বকেয়া না মেটানো পর্যন্ত তাতে রাজি হন নি। চুক্তি অনুযায়ী শ্রমিকদের পাওনা প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটির বকেয়া সহ অন্যান্য যে সকল সুযোগ সুবিধে বাগান কর্তৃপক্ষ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল সেগুলি দ্রুত মেটানো নিয়ে শ্রমিকদের সাথে কর্তৃপক্ষের টানাপড়েন চলছিল। এই বিষয়ে মালিকপক্ষের সাথে একাধিকবার বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে রবিবার রাতে পরিচালন কর্তৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে যান বলে জানা গিয়েছে। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়লেন প্রায় ১২০০ জন শ্রমিক। এদিন সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে বাগান বন্ধের নোটিশ দেখে বাগানের গেটে বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকেরা। বাগানের শ্রমিক মিনতি খেরওয়ার, সুষমা দর্জি, পুষ্মনী দর্জি, পার্বতী উরাও’রা বলেন শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার থেকে মালিকপক্ষ বঞ্চিত করে চলেছিল, সাথেই কোনও রূপ প্রতিবাদ করলেই দমন-পীড়ন মূলক ব্যবস্থার শিকার হচ্ছিল শ্রমিকেরা। তা সত্যেও শ্রমিকেরা চুপ করে ছিল। এর পর ও মালিক পক্ষ সামান্য অজুহাতে বাগান বন্ধ করে চলে গেল। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এদিন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা বাগানে শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়ান। এই ভাবে বাগান বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে সকলেই নিন্দায় সরব হন। চা বাগিচা মালিক গোষ্ঠীর সংগঠন ডি.বি.আই.টি.এর সম্পাদক সুমন্ত গুহ ঠাকুরতা বলেন ওই বাগানে গত এক বছরে প্রায় ৪৩ টাকা মজুরি বৃদ্ধি হয়েছে কিন্তু উৎপাদন সেই অনুপাতে কিছুই বাড়ে নি। উলটে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। অর্ধদিবসের বদলে সারাবছর পূর্ণ দিবস কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আগেই আলোচনা হয়েছিল। বাগানে ইতিমধ্যেই কাঁচাপাতাও এসে গেছে, কিন্তু শ্রমিকেরা বাগানের কথা চিন্তা না করে নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। এমতাবস্থায় বাগান বন্ধ করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না।
ছবি: অঙ্কিতা সেন (টি.এন.আই)