ফালাকাটার পথ দুর্ঘটনায় এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নিহত ও এক ছাত্র আহত
অরুনাংশু মৈত্র (টি.এন.আই ফালাকাটা) । টি.এন.আই সম্পাদনা বালুরঘাট
বাংলাডেস্ক, টি.এন.আই, ফালাকাটা, ২০শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯: ফালাকাটা পথ দুর্ঘটনায় নিহত এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও গুরুতর আহত এক। নিহত ছাত্রের নাম রাজিব দাস ও আহত ছাত্রের নাম রাজীবুল আলম, দুজনেই দেওগাঁও হাই স্কুলের ছাত্র। ঘটনায় প্রকাশ রাজিব দাস ও রাজীবুল আলম একটি মোটর বাইকে করে যাচ্ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে ময়রাডাঙ্গা গোপ্পূ মেমোরিয়াল হাই স্কুলে। সাথে আর দুটি বইকে তিনজন করে তাদের সহপাঠি একই সাথে ফাঁকা রাস্তা দিয়ে বাইক রেশ কম্পিটিশন করে যাচ্ছিল। তাদেড় কারো পরনেই হেলমেট ও স্কুল ইউনিফর্ম ছিল না। সেসময় পিছনের বাইকটি তাদের সামনে চলে আশায় গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে রাস্তার উপর মূক থুবড়ে পরে যাওয়ায় পেছনের তাদেরই সহপাঠির বাইকের চাকা রাজিব দাসের উপর দিয়ে চলে যাওয়ায় মাথা ফেটে প্রচুর রক্তপাত হয়। এই ঘটনা দেখে এলাকাবাসী ও অন্যান্য পরীক্ষার্থী তাদের ফালাকাটা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতলে নিয়ে এলে ডাক্তার মৃত বলে ঘোষণা করে রাজিব দাস কে ও রাজীবুল আলমকে প্রাথমিক চিকিত্সার পর পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়। রাজীবুল আলম পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার সে পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করায় অবিভাবকের সাথে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি গিয়ে পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়ায় বীরাপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতলে নিয়ে যায় চিকিত্সার জন্য। ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতলে ছুটে আসেন বিধায়ক অনিল অধিকারী।
তিনি বলেন, সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ নিয়ে এত প্রচার হচ্ছে তবুও সচেতন হচ্ছেনা জনগণ। হেলমেট ছাড়া, লাইসেন্স ছাড়া ছাত্রের হাতে কি করে বাইক তুলে দেয়। দূরঘটনাটি ঘটেছে ফালাকাটা ব্লকের পূর্ব ঝাড়বেলতলীর নেপালী বস্তিতে। এলাকায় শোকের ছায়া। রাজিব দাস বাবা মায়ের একমাত্র পুত্র সন্তান। দিদি দেওগাঁও হাই স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। বাবা বাবুরাম দাস পেশায় কৃষক মা গৃহবধূ। ছেলের মৃত্যু সংবাদ শুনে বাবা মা কথা বলতে বলে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ছেন ও মূর্ছা যাচ্ছেন। এরা দুজনেই ব্লকের দেওগাঁও হাই স্কুলের ছাত্র এদের পরীক্ষা কেন্দ্র পড়েছে পাসেরই ময়রাডাঙ্গা গোপ্পূ মেমোরিয়াল হাই স্কুলে। দেওগাঁও হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপক বর্মণ বলেন, আমরা বার বার বলেছি কোনোভাবেই যেন ছাত্রছাত্রীদের মোটর বাইক না দেওয়া হয়, বিশেষ করে লাইসেন্স ছাড়া তো কোন ভাবেই না দেওয়া হয়। এই ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। কোন ছাত্রকে যেন বাইক না দেওয়া হয় সে বিষয়ে মাইকে প্রচার করা হবে স্কুলের পক্ষে। এই স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি সহিদুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার দিন কি করে এদের হাতে বাবা মা বাইক তুলে দেয়। সন্তানের জন্য পরীক্ষার দিন একটু সময় বের করে পৌঁছে দিয়ে যেত পারেনা। এর জন্য বাবা মায়ের শাস্তি হওয়া দরকার। মৃত রাজিব দাসের বাবা বাবুরাম সাস বলেন, আমার ছেলে বাইক চালায়নি ও অন্য এক বন্ধুর সাথে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল কিকরে রাজীবুলের বাইকে উঠল বুঝতে পারছিনা। ফালাকাটা থানা সূত্রে জানায়, দুর্ঘটনা গ্রস্ত বাইকগুলি পাওযা যায়নি। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতলে পাঠানো হয়েছে। মৃতের পরিবারের থেকে কোন লিখিত অভিযোগ এখন পর্যন্ত জানানহয়নি।
ছবি: অরুনাংশু মৈত্র (টি.এন.আই)