স্মৃতির দুর্গা পূজা প্রতি বছর ফেরে বারে বারে…
অরুনাংশু মৈত্র
স্মৃতি যেন জোনাকি শুধু জলে আর নিভে। পুজো এলেই শুধু ছেলেবেলার স্মৃতির রোমন্থন। সেই ছেলে বেলাকে খুঁজে পেতে চায় প্রতিটি মানুষ তার নিজের সন্তানের মধ্যে। আধুনিকতার ছোয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে ক্যাপ বন্দুক। পূজার সময় সকল শিশুদের হাতেই দেখা মিলত ক্যাপ বন্দুকের, এখন সবই অতীত। আধুনিকতা ও সময়ের সাথে হারিয়ে গেছে সব। ক্যাপ বন্দুকের শব্দের সাথে সাথে আগমনীর বার্তা বইত আকাশ বাতাস জুড়ে। সত্তর আশির দশকের ছেলেমেয়েরা সেই সাদ আস্বাদন করেছে। এখন শুধুই কম্পিউটর আর মোবইল। সেখানেই ব্যাস্ত আট থেকে আসি। সে সময় একটি পাওয়া যেত দশ পয়সাতে আর এক পেকেট মিলটি একটাকায় পরবর্তীতে দশ পয়সা বেড়ে হলো পঁচিশ পয়সায়। এখন দশ পয়সার জায়গায় দশটাকা দিলেও পাওযা যায়না ক্যাপ বন্দুক। এসবের এখন দেখা মিলবে মিউজিয়ামে। সে সময়ের কিশোর এখন বাবা হয়েছে কিন্তু পুজো এলে মনে পরে সেসব ফেলে আশা হারিয়ে যাওয়া দিন গুলি। পুজোর এলেই সন্তানের জন্য নতুন পোশাকের সাথে খেলনা কিনতে গেলেই ভেসে ওঠে সেইসব জিনিস। এখন তো বাজারে বন্দুক অনেক আছে সেগুলি সবই ছোট ছোট প্লাস্টিকের বলের গুলি, কিছু আছে আবার লাইট ও সাউন্ড। কিন্তু তার মধ্যে নেই পুজোর গন্ধ, আগমনীর সুর। এখনকার বাবারা তাদের বাবার কাছে বায়না করত ৫/১০ তারার বন্দুক ও ক্যাপএর জন্য। এসব এখন সবই গল্প হয়ে রয়ে গেছে। পুজো আসছে মানেই পারার মোড়ে মরে বেলুন আর বন্দুক ও ক্যাপএর দোকান আর সাথে বাসের বাঁশি। এটাই ছিল পুজোর প্রথম ও সেরা বাজার। যতই দামীদামী পোশাক হোক, কিন্তু বন্দুক ও ক্যাপ না কিনলে পূজায় মন ভরতনা। বায়না একটাই বন্দুক ও ক্যাপ লাগবেই। আর এই বন্দুক ও ক্যাপ নিয়ে আপন পাড়াতোতো বন্ধুদের সথে মিষ্টি ঝগড়া খুনসুটি লেগেই থাকতো। বাবা মায়ের সাথে নতুন জামা কাপড় পরে ঠাকুর দেখতে যাওয়া, আর পকেটে করে লুকিয়ে ক্যাপ বন্দুক নিয়ে পাশের পারায় ঠাকুর দেখার চলে সেপারার বন্ধুদের সাথে ক্যাপ বন্দুক নিয়ে একটু খেলা। দিন বদলায়, বদলায় সমাজ। আসে নতুন নতুন উপহার এটাই প্রকৃতির নিয়ম। শুধু রয়ে যায় পুরানো স্মৃতি, যা মধুর। সেটাই সময়ে সময়ে ফিরে আসে জীবনে। সেজন্যই কবি বলেছে স্মৃতি যেন জোনাকি শুধু জলে আর নিভে।