মেখলীগঞ্জ সংলগ্ন কুচলিবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির পরিষেবা মুখ থুবরে পড়েছে
স্বপন রায় বীর (টী.এন.আই মেখলীগঞ্জ) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টী.এন.আই, মেখলীগঞ্জ, ৩০শে জুন, ২০১৮: প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত প্রায় ৫০ হাজার মানূষ৷ স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে প্রাথমিক পরিষেবা মিলছে না ভারত – বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা কুচবিহার জেলার মেখলীগঞ্জ মহকুমার প্রত্যন্ত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা কুচলিবাড়িতে৷ কুচলিবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দীর্ঘ তিন বছর ধরে ডাক্তার না থাকায় পরিষেবা প্রায় বন্ধের মুখে৷ একজন মাত্র নার্স আছেন৷ ডাক্তার না থাকায় রোগীরা এখানে আসলে কেউ ফিরে যান আবার কেউ কম্পাউন্ডার, নার্স এমনকি হাসপাতাল সুইপার এর কাছ থেকে ওষুধ নিচ্ছেন৷ কয়েক বছর ধরে এভাবেই ওষুধ দেওয়া হচ্ছে এই প্রাথমিক হাসপাতলে৷ যদিও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় আগে এই অবস্থা ছিলনা৷ একসময় ডাক্তার, নার্স, ছয়টি বেড, প্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ পাওয়া যেত৷ স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, প্রায় ছয় বছর ধরে ডাক্তারের অভাবে এখানকার সমস্যা চলছে। দিন যত যাচ্ছে পরিষেবা আরও কমে যাচ্ছে৷ তবে তিন বছর ধরে কোন ডাক্তার না থাকায় চরম নাজেহাল অবস্থার মধ্যেই থাকতে হচ্ছে এই এলাকার মানূষকে৷ এখানকার কুচলিবাড়ি, বাগডকরা অঞ্চলের প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানূষ সরকারী স্বাস্থ্য পরিষেবা না পেয়ে একাধিক বার জেলা শাসক, মহকুমা শাসক এবং সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দের কাছে আবেদন জানান৷ কিন্তু কাজ হয়নি৷ দিনের বেলা কোন রোগী বা প্রসূতিদের সমস্যা হলে তাদের ২৫ মাইল রাস্তা অতিক্রম করতে হয়।
সীমান্তের কাঁটাতার এবং খোলা সীমান্ত পেড়িয়ে যেতে হয় মেখলীগঞ্জ সদর হাসপাতালে৷ কিন্তু, রাতের বেলা এমন রোগী বা প্রসূতি নিয়ে চরম বিপদে পরতে হয় এখান কার মানূষদের৷ এই অঞ্চলে চোরা চালানকারীদের উপদ্রব অনেক বেশি। ভারী বৃষ্টি বা ঘন কুয়াশার রাতের পথে সাথে বিপদের তাদের সন্মুখীন হতে হয় মাঝে মধ্যেই৷ এখনও এই এলাকায় অনেক গ্রাম আছে যারা কুচলিবাড়ি হাসপাতালের পরিষেবা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। তারা এখানে চিকিৎসা করাতে এসে সমস্যায় পড়েন৷ ডাক্তার না পেয়ে ফিরে যেতে হয় গ্রামে৷ জানা যায়, মাস খানেক আগে এক ডাক্তার আসার কথা ছিল৷ কিন্তু সেই ডাক্তারও এই হাসপাতালে আসেননি, অন্যত্র চলে যান৷ অনেক রোগী হাসপাতালে এসে তালা বন্ধ দেখে পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যান৷ এবার প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে স্থানীয় মানুষের দাবি কুচলিবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সরকারী পরিষেবা চালু করার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হোক৷ এই বিষয়ে কুচলিবাড়ির বাসিন্দা ফুলতি রায়, মানবেন্দ্র নাথ রায়, মনোজ বর্মনের মত অনেকই বলেন – ছয় বছর ধরে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আছি আমরা। এমন বিপদে আছি যে জরুরি রোগী বা প্রসূতিদের মেখলীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে। রোগী নিয়ে প্রায়ই নাজেহাল হতে হচ্ছে৷ এই বিষয়ে মেখলীগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ সুশোভন মন্ডল জানান – “কুচলিবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমস্যার বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে৷ আশা করি, স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি দেখবেন এবং বিবেচনা করে সঠিক পদক্ষেপ নেবেন”৷
ছবি: স্বপন রায় বীর (টি.এন.আই)