টাক ফাটা গরমে রেহাইের আশা আবার সেই তালেরশাঁস
পার্থ চ্যাটার্জি
ছোট বেলায় বইয়ের পাতায় পড়েছি, তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে উকি মারে আকাশে। মনে সাধ কালো মেঘ ফুড়ে যায়, একেবারে উড়ে যায়-কোথা পাবে পাখা সে।তাই তো সে ঠিক তার মাথাতে গোল পাতার মাঝে থাকে গোল গোল তাল। আর এই তাল বিক্রি করে ভালোই মুনাফা লাভ করছেন ব্যবসায়ীরা। যেভাবে বেশ কিছু দিন যাবত গরম পড়েছে সেখানে দারিয়ে একটু গরম থেকে রেহাই পেতে রাস্তার ধারে বসে তাল বিক্রেতাদের দেরারে বিক্রি হচ্ছে তালেরশাঁস। এমনি চিত্র ধরা পড়লো উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় দেদার বিকোচ্ছে তালশাঁস। সল্প সময়ে অপ্ল পয়সার এই ব্যবসায় লাভের অঙ্ক আকাশ ছোঁয়া। গরমের হাত থেকে বাঁচতে সদ্য বাজারে ওঠা রসাল তালের শাঁস কিনছেন সাধারণ মানুষ। তালশাঁস বিক্রেতাদের দাবী অল্প কদিনের ব্যবসায় লাভের অঙ্কটা বেশ ভাল। তাল শাঁস বিক্রেতারা এক একটি তাল গাছ ৩০০ টাকা দিয়ে কেনেন। প্রতিটি তাল গাছে ২০০টি বা তার বেশি কচি তাল পাওয়া যায়। গাছ থেকে তালগুলি পেরে কালিয়াগঞ্জ শহরের রাস্তার ধারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। একটি কচি তালের মধ্যে তিনটি করে শাঁস থাকে।
একটি তাল অর্থাৎ ৩ টি শাঁস নিলে তার দাম লাগছে ১০ টাকা। ফলে গাছ থেকে পাড়ার সময় একটি কচি তাল প্রায় ১ টাকা বা তার কিছু বেশি দামে কিনছেন তালশাঁস বিক্রেতারা। সেই তাল বিক্রি করছেন ১০ টাকা দিয়ে। ফলে প্রতিটি কচি তাল বিক্রি করে তালশাঁস বিক্রেতারা লাভ করছেন ৮ টাকা বা তারও বেশি। একজন তালশাঁস বিক্রেতা প্রতিদিন ৩০০ টি বা তার বেশি কচি তাল বিক্রি করেন। ফলে দিনের শেষে একজন তালশাঁস বিক্রেতার লাভের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৬০০ টাকা বা তার বেশি। শাঁস ছাড়া কাটা তালের অংশগুলি বাড়িতে এনে শুকিয়ে জ্বালানীর কাজে লাগান ব্যবসায়ীরা।
একে তো বাড়ির জ্বালানীর সমস্যার সমাধান হয় তার উপর লাভের পরিমাণ বেশি হওয়ায় স্বল্প দিনের ব্যবসায় নেমে পড়েছেন অনেক বেকার যুবক। কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ৮ নম্বর মুস্তফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দন গ্রামের বাসিন্দা তালশাঁস বিক্রেতা অসিত সরকার জানান বিগত কয়েক বছর ধরে কালিয়াগঞ্জে তালশাঁস বিক্রি করতে আসেন। বছরের অন্যান্য দিন গুলিতে অর্থের বিনিময়ে গাছ কাটা ও গাছ ঝোড়ার কাজ করলেও জুন মাসের দিন গুলিতে তালশাঁস বিক্রি করি। স্বল্প সময়ের এই ব্যবসায় প্রচুর লাভ থাকলেও তাল গাছে উঠে তাল নামানোর ঝক্কিও কম নয়। কয়েকবার গাছ থেকে পরে গিয়ে হাত ও ঘাড়ের হাড় ভেঙ্গেছে। তাও শুধুমাত্র স্বল্প সময়ে বাড়তি উপার্জনের অর্থ ঘরে আনতেই প্রতি বছরের এই সময়টায় ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্যবস্যায় নেমে পড়ি। অপরদিকে তালেরশাঁস খেতে আসা অজিত মণ্ডল ও কৃষ্ণ দাস জানান, যেভাবে গরম পড়েছে তালের শাঁসের উপকারিতা আছে। এক দিকে যেমন গরমের হাত থেকে ত্রেষ্টা যেমন মেটায় শরীর ঠান্ডাও রাখে। মাত্র ১০ টাকার বিনিমিয়ে ৩টি তালের শাঁস পাওয়া যাচ্ছে তাল তারা অন্যান ফলের মত তালের শাঁস খাচ্ছে।