গোয়ালপোখরে ভোট পরবর্তী রণক্ষেত্রে মৃত এক জখম ২৫
দীপঙ্কর দে (টী.এন.আই ইসলামপুর) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টী.এন.আই, ইসলামপুর, ১৬ই মে, ২০১৮: ভোট পরবর্তী হিংসায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিল গোয়ালপোখরের হামডাঙ এলাকা। নির্দল বনাম ফরওয়ার্ড ব্লক সংঘর্ষে মৃত এক গুলি বোমার আঘাতে জখম ২৫। ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোয়ালপোখর থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, গোয়ালপোখর ব্লকের ধরমপুর – ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের হামডাঙ গ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসায় বুধবার সকালে নির্দল ও ফরওয়ার্ড ব্লকের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে এলাকা। দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজির জেরে এলাকা কেঁপে ওঠে। বৃষ্টির মতো দুপক্ষের মধ্যে চলে গুলি বিনিময়। বোমাবাজি ও গোলাগুলির আঘাতে প্রায় ২৫ জন গুরুতর জখম হয়ে পড়ে। জখমদের গোয়ালপোখরের লোধন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ১১জনকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইসলামপুর হাসপাতালে আসেন ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মী মহম্মদ ঈশাক। এরপরই একে একে বোমা ও গুলির জখমে উভয় দলের ৯জন গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়ে ইসলামপুর হাসপাতালে আসেন। শেষমেষ ইসলামপুর হাসপাতালের গেটে পৌঁছতেই মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে পৌঁছান নির্দল কর্মী কাশিমুদ্দিন। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করতেই পরিজনদের পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের কান্নার রোল পরে যায়। বাকি আহতদের ১০ জন প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরে যান এবং ৪ জন লোধন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পাশাপাশি দলীয় কর্মীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই হামডাঙ গ্রামে ফের শুরু হয়ে যায় দুপক্ষের গুলি বিনিময়। হামডাঙ গ্রামে ঢোকার প্রায় ২ কিলোমিটার আগেই প্রেস লেখা মোটর বাইক দেখতেই বাইক লক্ষ্য করে ছোড়া হয় ৪/৫ টি বোমা।
বোমার ধোঁয়ার আড়ালেই ভেসে আসে হুমকি। ” ফিরে যা, গ্রামে ঢুকলে জান নিয়ে ফিরতে পারবি না ” সেখান থেকে কোনওমতে পালিয়ে ফিরে আসতেই স্থানীয় এক গ্রামবাসীর কাছে জানা যায়, পুলিশ গ্রামে ঢুকতে পারেনি আপনারা কি করতে গিয়েছিলেন, চলে যান। গোয়ালপোখর থানার ওসি অভিজিৎ দত্তকে ফোনে বারবার যোগাযোগ করেও না পেয়ে ঘটনাস্থল ছাড়তে বাধ্য হই। মৃত নির্দল কর্মী কাশিমুদ্দিনের আত্মীয় কলিমুদ্দিন বলেন, আমরা তৃণমূলের হয়ে ভোটে ফর্ম ভরেছিলাম। সিম্বল না পাওয়ায় আমরা নির্দল লড়েছি। ফরওয়ার্ড ব্লকের লোকেরা আমাদের উপর বোমা গুলি চালিয়েছে। আমাদের একজন মারা গিয়েছে আরও অনেকে জখম আছে। গোয়ালপোখরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি গোলাম রসুল ওরফে মুনি বলেন, আমাদের এলাকা শান্তিপ্রিয় এলাকা, আমরা সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি সবাইকে নমিনেশন করতে দিয়েছি। কাউকেই বাধা দিই নাই। কিন্তু এই নির্দল, ফরওয়ার্ড ব্লক সহ বাকি দলগুলি বোমা গুলি সহ বহিরাগতদের এনে আমাদের এলাকায় অশান্তি ছড়াচ্ছে। এটা আমরা কোনওভাবেই বরদাস্ত করবো না। চাকুলিয়ার বিধায়ক ফরওয়ার্ড ব্লকের আলী ইমরান রমজ ওরফে ভিক্টর বলেন, ওটা তৃণমূলের সাথে তৃণমূলের গন্ডগোল তবে নির্দলকে আমাদের লোকেরা সমর্থন দিয়েছিল। সেকারনে আজকের গন্ডগোল থামাতে গিয়ে আমাদের এক কর্মী ঈশাক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আমরা গুলি বোমা নিয়ে বহিরাগতদের আনলে চাকুলিয়া ব্লকে একটিও আসনে ওরা থাকতো না। ওড়াইতো বোমাবাজি করে গুলি চালিয়ে চাকুলিয়ায় ৬টি বুথ দখল করেছে। সেখানে আজকে পুননির্বাচন হচ্ছে। ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, এলাকায় পুলিশ রয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
ছবিঃ দীপঙ্কর দে (টী.এন.আই)