নববর্ষের দিন মেখলীগঞ্জে আয়োজন হল বই প্রকাশ সাহিত্য আড্ডা
সুশান্ত নন্দী (টী.এন.আই সংস্কৃতি) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টী.এন.আই মেখলীগঞ্জ, ১৬ই এপ্রিল, ২০১৮: সেদিন ছিল বাঙালির উৎসব মুখর একটা দিন। সেদিন ছিল নববর্ষ। বছর শুরুর প্রথম দিনে ওপার বাংলার বাতাস এসে নৃভৃতে শুভেচ্ছা জানিয়ে দিয়ে গেল এপার বাংলার মানুষদের। আর সেই বিশেষ দিনটিতেই লেখক স্বামীর জন্মদিন উপলক্ষে একাধিক জেলার কবি, সাহিত্যিকদের নিয়ে যেন চাঁদের হাত বসিয়ে দিলেন লেখিকা স্ত্রী। স্বামী কুনাল নন্দীর লেখা প্রথম গ্রন্থ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হাত দিয়ে প্রকাশ করলেন স্ত্রী তথা অপরাজিতা অর্পণ সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক লক্ষী নন্দী। কুচবিহার জেলার প্রান্তিক শহর মেখলীগঞ্জের ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের তিনবিঘা করিডোরে ছিল এমনই ব্যতিক্রমী আয়োজন। “বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে বিপুল পরিবর্তন ঘটেছে নিঃশব্দে নীরবে। বৈশাখ কেন্দ্রীক উৎসবের একটি ভালো দিক আছে। অনুষ্ঠানে এমনই আবহকে তুলে ধরে বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক বঙ্গরত্ন আনন্দ গোপাল ঘোষ তার স্বাগত ভাষণে জানান,আজকের পয়লা বৈশাখ পৃথিবীতে একটা বড় উৎসব। এপার বাংলায় আজকের দিনে অপরাজিতা অর্পণের গুরুত্ব বুঝি এখানেই। তাই আসুন ভাষার জন্য, সাহিত্যের জন্য এই বিশেষ দিনে সমর্পিত হোক আমাদের শব্দের অনুভব। “রাত্রিভুমির কবিতা শোনান কবি সন্তোষ সিংহ। কৃষি বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন কোচবিহার জেলা সহ কৃষি অধিকর্তা গোবিন্দ চন্দ্র সেন, তিস্তা জান কৃষক কল্যাণ সংঘের মুখ্য স্বেচ্ছাসেবক সন্তোষ রায়। বৃদ্ধাশ্রমের কবিতায় নিজেকে উজার করে দেন মঞ্জুরী পাল ধর। সম্পা শেঠ শোনান মাকে নিয়ে লেখা কবিতা। প্রশান্ত প্রামানিক শোনান সীমান্তের কবিতা।স্মারক সম্মান তুলে দেওয়া হয় মুজনাই পত্রিকার সম্পাদক সৌভিক রায়,কবি সুবীর সরকার, কবি শচী মোহন বর্মন,কবি সন্তোষ সিংহ,কবি অর্চণা মিত্র, ডঃ আনন্দ গোপাল ঘোষ, এবং বিশিষ্ট কবি ও নাট্য আন্দোলনের একজন কর্মী সৌমিত বসুকে। ‘একশো কৃষির কথা’শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করে প্রকাশিত হয় গুণীজনের হাত দিয়ে।শ্যামলী দাসের কবিতা বেশ।
দুঃখের বিষ এর কথকতা অর্চনা মিত্রর কবিতায়। মজুরি বিষয়ক কবিতায় স্বতস্ফূর্ত বিচরণ বিবেক কবিরাজের। চম্পা ভট্টাচার্য শোনান ‘রাহু মুক্ত’ শীর্ষক নারীদের নিয়ে কবিতা। বরাক ভূমের কবি নিহার দাস শোনান তার অনু কবিতা। মানসী কবিরাজের অদ্ভুত মেঘ কবিতা অসাধারণ। মজিবুল হক রঙিন স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন কবিতায়।লক্ষী নন্দীর কবিতায় নির্জলা একাদশীর প্রেক্ষণাপটে রাবীন্দ্রিক কথা উঠে এলো। শুভময় চক্রবর্তী তার ‘বর্ণ প্রবাহ সমন্বয়’নিয়ে কবিতা শোনান।জয় ঘোষের লক্ষি নন্দীকে নিয়ে লেখা কবিতা দুর্দান্ত। অদ্বিতীয়া শিল্পী গোষ্ঠীর উদ্বোধনী নৃত্যে অংশ নেন, ফিজা মিত্র মজুমদার, অন্বেষা চক্রবর্তী, প্রতিভা সাহা, সম্পৃক্তা মিত্র মজুমদার, তুলসী কর,রুনা সাহা, শিল্পা পান্ডে প্রমুখ। বাসুদেব ভট্টাচার্যের মাটির গান ছিল এদিনের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি অনুষ্ঠান। তবে এদিনের অনুষ্ঠানের বিশেষ প্রাপ্তি ছিল কলকাতার কবি সুগত বসুর কবিতা। তার কবিতায় যে মন ভরেনি সকলের তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। বার বার শুনতে ইচ্ছে করে যে কবিতা, যে কবিতারা কথা বলে ওঠে, হেঁটে বেড়ায় রোদ্দুরের ক্যানভাসে তেমনই কিছু শব্দের উচ্চারণে যেন মন্ত্রমুগ্ধ সীমান্তের চুপকথারা। সমগ্র অনুষ্ঠান সমালোচনা করেন সুশান্ত নন্দী ও অন্বেষা চক্রবর্তী। আদ্যন্ত সহযোগিতায় সৌমিত বসু।
ছবিঃ সুশান্ত নন্দী (টি.এন.আই)