ভারী বর্ষণের জেরে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত
সুপ্রিয় বসাক (টী.এন.আই ধুপগুড়ি) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টী.এন.আই, জলপাইগুড়ি, ৫ই জুলাই, ২০১৮: অবিরাম বৃষ্টির ফলে উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে জলস্ফীতি ঘটে, তার জেরে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন জলমগ্ন। বুধবার রাত থেকে প্রায় টানা বর্ষণের ফলে জলপাইগুড়ির বাতাসা গলি, মহামায়া পাড়া, সার্ফ মোড়, হরিজন বসতি সহ বেশ কয়েকটি জনবহুল এলাকা এখন জলমগ্ন এছাড়াও প্লাবিত ডুয়ার্সের মাল ব্লকের চাপাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত। বেশ কিছু বাড়ির ঘরে পর্যন্ত জল ঢুকে যাওয়াতে, রাতের ঘুম পর্যন্ত উড়িয়ে দিয়েছেন এলাকাবাসী। কোমর জল থাকায় বেশ কিছু বাড়ির চুলোয় হাঁড়ি চাপেনি। স্বাভাবিক জনজীবন এককথায় ব্যাহত। এক স্থানীয় বাসিন্দা শংকর বাবু জানান, ঘরে প্রায় হাঁটু অবধি জল, বাধ্য হয়ে বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় উঠে আসতে হয়েছে। কিন্তু সুরাহা তাতেও মিলছে না, ত্রিপল ছাড়া থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ মানুষের জীবন এখন প্রায় শোচনীয় অবস্থায়। এই ঘটনার খবর পেয়ে জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল শ্রী সন্দীপ মাহাতো জানান, “আমরা ঘটনার ওপর কড়া নজর রাখছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
অন্যদিকে প্রবল বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হল মাল ব্লকের চাপাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। তিস্তা, ধরলা ও ডাংগি নদীর জল মিশে গিয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়ে এই এলাকার প্রায় ২৫০০ পরিবার। বেলা ২টো পর্যন্ত দেখা মেলেনি প্রশাসনের আধিকারিকদের বলে দাবি এলাকাবাসীদের। তারা জানান, জলের কারণে সমস্ত খাদ্যদ্রব্য নষ্ট হয়ে গেছে, তাঁর সাথে ভেসে গেছে নানান খাদ্যশস্যও। এলাকায় এখন খাদ্য সংকট। বাধ্য হয়ে স্থানীয়রা থার্মোকল ও কলাগাছ দিয়ে ভেলা বানিয়ে গবাদি পশু এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যত্র সরানোর চেষ্টা করছে। এলাকার প্রায় সর্বত্র কোমর উর্দ্ধে জল রয়েছে, এর জেরে এলাকায় যত পানীয় জলের কূপ ও টিউবওয়েল রয়েছে তা এখন জলের নিচে, ফলে দেখা দিয়েছে জল সংকটও। বর্তমানে স্থানীয়দের দাবি, সরকার যেন তাদের অতিসত্বর পানীয় জল ও ত্রাণ দিয়ে সহযোগিতা করুক। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আগামীতে আরো ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে উত্তরবঙ্গ জুড়ে। বানারহাটৈ ২৩০.০০ মিলিমিটার, হাসিমারাতে ১৯৮.২০ মিলিমিটার, জলপাইগুড়িতে ১৪১.৮০ মিলিমিটার, মালবাজারে ১২৬.৪০ মিলিমিটার, শিলিগুড়িতে ৭৪.৮০ মিলিমিটার, আলিপুরদুয়ারে ২২.২০ মিলিমিটার এবং কুচবিহারে ১৮.৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এদিন তিস্তা ব্যারেজ থেকে গজলডোবায় প্রায় ২২৩২ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।
ছবি: সুপ্রিয় বসাক (টি.এন.আই)