চোপড়ায় বালি মাফিয়া-গ্রামবাসী সংঘর্ষ গাড়ি ভাঙচুর, লাঠি চার্জ, আটক ১৭
দীপঙ্কর দে (টী.এন.আই ইসলামপুর) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টী.এন.আই ইসলামপুর ২১শে জানুয়ারি ২০১৮: গ্রামের রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই লড়ি যাতায়াত নিয়ে বালি মাফিয়াদের সাথে গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ, পুলিশের লাঠিচার্জ ভাঙচুর দুটি লড়ি। এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া থানার চিতলঘাটা গ্রামে। মহানন্দা নদীর চড় এলাকার আদ্রাগুড়ি ও চিতলঘাটা গ্রামে উত্তেজনা থাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। চোপড়ার মহানন্দা নদীর চড় থেকে বালি তুলে সেই বালি দশচাকা লড়ি বোঝাই করে আদ্রাগুড়ি গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীন সড়কের উপর দিয়ে চলাচল করায় ভেঙে পরছে রাস্তা। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আদ্রাগুড়ি এলাকার বাসিন্দারা ওই রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই লরি যাতায়াতের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এরই প্রতিবাদ করে ওই রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই লড়ি যাতায়াত বন্ধ করে দেন আদ্রাগুড়ির বাসিন্দারা। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় দুটি বালি বোঝাই লড়ি আদ্রাগুড়ি গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাবার সময় স্থানীয় এক শিশু লরির ধাক্কায় আহত হয়। ঘটনার জেরে উত্তেজিত স্থানীয় বাসিন্দারা লড়িদুটি আটকে তা ভাঙচুর করে। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে চোপড়া থানার পুলিশ। এরপর পুলিশ লড়িদুটিকে থানায় নিয়ে আসার জন্য চালককে বলে আসলেও চালকরা থানায় না নিয়ে গিয়ে সেখানেই রেখে দেয়। রবিবার সকালে চিতলঘাটার বালি মাফিয়া তথা বাসিন্দারা ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে না দেওয়ার জন্য আদ্রাগুড়ির বাসিন্দাদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। সোনাপুর গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান আরতি ওরাওয়ের স্বামী সুরেশ ওরাও ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে আসলে তার বোলেরো গাড়িটি ভাঙচুর করার পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি মোটরবাইক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত চিতলঘাটার বাসিন্দারা।
দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ বেধে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আবার ছুটে আসে চোপড়া থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। উত্তেজনা ও সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ লাঠিচার্জও করে। পুলিশ দুপক্ষের মোট ১১ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা থাকায় বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। অন্যদিকে ঘটনার জেরে ইসলামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কুমার ভুষন সিংয়ের নেতৃত্বে চোপড়া থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে হাফতিয়াগছ এলাকা থেকে বালি মাফিয়া টিটু সহ ৬ জন সহ দুটি আর্থমুভার আটক করা হয়েছে। এছাড়াও চোপড়া থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও পুলিশের অভিযান চলতে থাকে৷ আদ্রাগুড়ির বাসিন্দা অনুপ মন্ডল বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই লরি চালানোর প্রতিবাদ জানিয়ে প্রশাসনকে লিখিত দিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। গতকাল এক শিশু লরির ধাক্কায় আহত হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সোনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী সুরেশ ওরাও বলেন, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছাতেই চিতলঘাটার বাসিন্দারা আমার গাড়ি ভাঙচুর করে, আমার ভাইকে মারধোড় করে। আমি শেষে পুলিশকে খবর দিই। ইসলামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কুমার ভূষণ সিং বলেন, ঘটনার জেরে দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে মহানন্দার চড় থেকে ১১জন বালি মাফিয়াকে আটক করা হয়েছে এবং হাফতিয়াগছ এলাকা থেকে বালি মাফিয়া টিটু সহ ৬ জন সহ দুটি আর্থমুভার আটক করা হয়েছে। এধরনের অপরাধ কোনওমতেই বরদাস্ত করা হবে না।
ছবিঃ দীপঙ্কর দে (টী.এন.আই)