বালুরঘাটে গৃহশিক্ষকের ধর্ষণের শিকার ছাত্রী, অপমানে আত্নঘাতি
দীপঙ্কর মিত্র (টী.এন.আই বালুরঘাট) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি
বাংলাডেস্ক, টী.এন.আই বালুরঘাট, ০৫ই ডিসেম্বর ২০১৭: গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঘর থেকে ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধারের পর, নিছক আত্মহত্যা বলেই মনে করেছিল পরিবার। কিন্তু পরবর্তীতে বই এর মধ্যে থেকে সুইসাইট নোট উদ্ধারে বিষয়টি পরিস্কার হয় সকলের। গৃহশিক্ষকের দ্বারা ধর্ষণের স্বীকার হয়ে অপমানে আত্মঘাতী দশম শ্রেনীর নাবানিকা ছাত্রী। বর্তমানে অভিযুক্ত শিক্ষক সুজন মন্ডল পলাতক। অভিযুক্ত গৃহশিক্ষকের তরফে টাকা ও জমি দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার প্রলোভন দেওয়া হলেও ন্যায় বিচারের আশায় শেষে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার। স্থানীয় সূত্রের খবর, বালুরঘাট থানার পতিরামের ঝাপুর্সি এলাকার বাসিন্দা মৃত ছাত্রীর নাম মিরা রায়। বাবা প্রতাপ রায় ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। বাড়িতে মা ও এক ভাই রয়েছে তার। দশম শ্রেনীর ওই ছাত্রী কুমারগঞ্জ থানার অন্তর্গত বেলতারা এলাকার বাসিন্দা গৃহশিক্ষক সুজন মণ্ডলের কাছে পড়তে যেত। গত ২৫ নভেম্বর স্কুলে টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরে সে। সেসময়য় মা ও ভাই মাঠে গিয়েছিল। তারা ফিরে আসতেই দেখে ঘরের মধ্যে গলায় ফাঁসে ঝুলছে মিরা। ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের পর নিছক আত্মহত্যা বলে মনে করেছিলেন পরিবারের সকলে। কিন্তু দুদিন পরে মৃতার পড়ার বই এর মধ্যে থেকে একটি সুইসাইট নোট উদ্ধার হয়। তাতে তারা বুঝতে পারেন সাধারন আত্মহত্যা নয়, গৃহশিক্ষকের দ্বারা যৌন নির্জাতনের স্বীকার হয়েই লজ্জা ও অপমানে মৃত্যুর পথ বেঁছে নিয়েছে মিরা। মৃতার পিসিমা বিজলী রায় এবং জ্যাঠামশাই কালু রায় বলেন, নোট বুক থেকে তারা মৃত্যুর কারন সম্পর্কে পরিস্কার হয়েছিলেন। মিরা নিজের হাতে লিখে গিয়েছে একাধিকবার সে তার গৃহশিক্ষক সুজন মন্ডলের দ্বারা যৌন হেনস্থার স্বীকার হয়েছে। তারমত অনেক মেয়ে এই শিক্ষকের স্বারা এমন হেনস্থা হয়েছে। কাউকে বলতে পারছিলনা সে। লজ্জা ও অপমানে সে মৃত্যুর পথ বেঁছে নিয়েছে। সুইসাইট নোট উদ্ধারের পরেই পরিবারের লোকেরা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেছিলেন। কিন্তু প্রথমাবস্তায় তা নেওয়া হয়নি বলে দাবী অভিযোগকারীদের। এদিকে ওই শিক্ষক ও তার লোকেরা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ৪ লক্ষ টাকা এবং জমি দিতে চায় মৃতার পরিবারকে। শেষ পর্যন্ত সোমবার অভিযোগ জমা নেয় বালুরঘাট থানার পুলিশ। এদিকে অভিযোগ জমা পরতেই পলাতক গৃহশিক্ষক সুজন মণ্ডল। অভিযুক্তর খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে বালুরঘাট থানার পুলিশ। মেয়ের মৃত্যুর জন্য দোষী শিক্ষকের শাস্তির দাবীতে গত ২ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠান তারা।
ছবিঃ দীপঙ্কর মিত্র (টী.এন.আই)