৩১ নং জাতীয় সড়ক এখন পুলিশ ও মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্যে
দীপঙ্কর দে
৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক পুলিশ ও এন্ট্রি মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। বাংলা ও বিহার পুলিশ এবং এন্ট্রি মাফিয়াদের দাপটে নাকাল লড়ি চালকরা। অবিলম্বে সমস্যার সুরাহা না হলে রোড ট্যাক্স বকেয়া রেখে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে লড়ি মালিকরা। জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুরের শেষ সীমান্ত সোনাপুর ও চোপড়া থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি পার্শবর্তী রাজ্য বিহারের কিসনগঞ্জেও বালি বোঝাই লড়ি আসা যাওয়া করে। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়ক বিহারের কিশনগঞ্জ শহরের উপর দিয়ে যেতে হয়। পশ্চিমবাংলার পাশাপাশি বিহারের পুলিশও এই সীমানার সুযোগে বালি বোঝাই লড়ি চালকদের নাজেহাল করে বলে অভিযোগ। পুলিশের মদতে রয়েছে এন্ট্রি মাফিয়া। ৩ হাজার টাকা প্রতি মাস এন্ট্রি করে মাফিয়াদের থেকে কার্ড সংগ্রহ না করলে রোডে গাড়ি চালাতে পারবে না ওই চালক বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করলে হয় এলাকাছাড়া না হয় মিথ্যা মামলায় জেলে ঢুকিয়ে দেবার অভিযোগ। বেশি বাড়াবাড়ি করলে চালকদের অনেকসময় জীবনটাও খোয়াতে হয় বলে অভিযোগ। সব কিছু জেনেও ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে আছে বিহার পুলিশ প্রশাসন বলে অভিযোগ লড়ি চালকদের। লড়ি চালকরা জানিয়েছে, সোনাপুর থেকে নিয়ে কানকি পর্যন্ত কি বাংলার পুলিশ কি বিহারের পুলিশ টর্চ মারলে হাত দেখালেই ৫০ টাকা ১০০ টাকা দিতে হয়। কোনও ভাবে নজর এড়িয়ে বেরিয়ে গেলে পিছু করে ধরলে ডাবল ফাইন। এর উপর এন্ট্রি মাফিয়া। পুলিশের মদতেই মাফিয়াদের বাড়বাড়ন্ত। একটু ওভার লোডিং না করলে এগুলো টাকা মালিক কোথা থেকে দেবে। মানা করলে মরতে হবে। অসহায় হয়ে লড়ি মালিকরা ট্যাক্স বাকি রেখে সড়কে গাড়ি দাঁড় করিয়ে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে সামিল হবে বলে হুমকি দিয়েছে। কানকি ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ ইন্তেজার আলম বলেন, আমরা সোনাপুর, চোপড়া থেকে ৩০০ টাকার বালি কিনে কানকি পর্যন্ত আসতে আসতে সেই বালি ৩ হাজার টাকা হয়ে যাচ্ছে। মানুষের দাম বেশি পড়ছে ব্যাবসা কম হচ্ছে। বাংলায় তো আছেই কিন্তু বিহারের পুলিশ খুব অত্যাচার করছে। এর উপর আবার মাফিয়াদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা মাস প্রতি এন্ট্রি করাতে হবে। আমরা কোথায় থাকি। এভাবে চলতে থাকলে আমরা রোড ট্যাক্সও দেবো না রোডে গাড়ি লাগিয়ে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট করবো। উত্তর দিনাজপুরের জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং বলেন, বালির গাড়ি থেকে পুলিশ টাকা নিচ্ছে এই ধরনের ঘটনা আমার জানা নেই। বিহারের কিশনগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কুমার আশিষ বলেন, এই ধরনের ঘটনা কখনই কাম্য নয় তবে আমি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা অবশ্যই গ্রহণ করবো।
ছবিঃ দীপঙ্কর দে (টী.এন.আই)