রায়গঞ্জে অনুষ্ঠিত হল শিশুমঙ্গলের বিশেষ শিশুদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

পার্থ চাটার্জি (টী.এন.আই রায়গঞ্জ) । টি.এন.আই সম্পাদনা শিলিগুড়ি

বাংলাডেস্ক, টী.এন.আই রায়গঞ্জ ৬ই জানুয়ারি ২০১৮: দেবেন্দ্র ঝাঝারিয়া, প্যারা অলিম্পিক গেমস এ ভারতের প্রতিভূ। ২০১৬  তে জ্যাভেলিন থ্রো ইভেন্টে ভারতের জন্যে সোনা এনেছিলেন। তাঁর মা নিশ্চয় সেই স্বপ্নটা দেখেছিলেন। তাই তিনি পেরেছেন। সেই একই স্বপ্ন হয়তো দেখতে শুরু করেছে রায়গঞ্জ “শিশুমঙ্গল”-এর অটিজম, অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভ ডিসঅর্ডার, মেন্টাল রিটার্ডেশন বা সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত আদিত্য, শ্রীতিশা, সুস্মিতা, নুর বা সৌমাল্যদের মায়েরা। তারাও দেবেন্দ্র ঝাঝারিয়ার মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। কিন্তু আজ রায়গঞ্জ টাউন ক্লাব মাঠে যখন তারা ছুটছিল, বল ছুঁড়ছিল, মাথায় টুপি পড়া বা যেমন খুশি সাঁজোর মতো প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশ নিচ্ছিল তাদের বাকি শিশুদের থেকে আর কোনভাবেই পৃথক মনে হচ্ছিল না। এই পৃথিবী বা সমাজ যাদের একটু অন্য চোখে দেখে, নিজেদের থেকে দূরে সরিয়ে রাখে, তাদের এইভাবে খেলতে দেখে আনন্দে চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি অনেক অভিভাবকই। হাততালিতে হাততালিতে ভরে যাচ্ছিল গোটা মাঠ যখন একে একে নাম ঘোষণা হচ্ছিল প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানাধিকারীদের। আনন্দে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি সংস্থার সাইকোথেরাপিস্ট, স্পিচ থেরাপিস্ট, স্পেশাল এডুকেটর বা শিশু চিকিৎসক ডাঃ নীলাঞ্জন মুখার্জীদের মতো আপাত গুরুগম্ভীর প্রশিক্ষকরাও। আজ যে তারাও আদিত্যদের সাথে একইসাথে ভিক্ট্রি স্ট্যাণ্ডেই দাঁড়িয়ে। এই জয় তো তাদেরও। সংস্থার তরফে শ্রীমতী রিমা মুখার্জী জানালেন যে তাদের উদ্দেশ্য আজ সফল। এই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তারা প্রমাণ করতে পেরেছেন যে এই বাচ্চারাও সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে অনেক অসম্ভবকেই সম্ভব করতে পারে। তিনি আরও জানান যে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা শিশুমঙ্গলে এই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য বিশেষ স্কুল শুরু করতে চলেছেন, যাতে এই বাচ্চারা আরও দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।

ছবিঃ পার্থ চাটার্জি (টী.এন.আই)

Facebook Comments
Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!